কেউ চাইলে নির্দ্বিধায় আমার লিখা এই আর্টিকেল টি শেয়ার করতে পারেন। আমার কোনো আপত্তি নেই।
সাই-ফাই মুভিপ্রেমিদের মুখে যে মুভির নামটি শোনামাত্র আমাদের চোখেমুখে একটি মুচকি হাসি দেখা যায় , তা হলো Matrix । ১৯৯৯ সালে রিলিজ হওয়ার পর দিনে দিনে সময়ের বিবর্তনের মাঝেও যে মুভিটি এখনো হলিউড ফিল্মের ইতিহাসে সবচেয়ে স্মার্ট ফিল্ম হিসেবে পরিচিত। তা এই ম্যাট্রিক্স। মারাত্তক কমপ্লিকেটেড এবং এতো পাওয়ারফুল কনসেপ্ট , হলিউডের কোন সাই-ফাই মুভিতে আজ পর্যন্ত কারোও চোখে পড়েনি।
মজার ব্যাপার এই যে , এই মুভি সিরিজটি যখন রিলিজ হয়েছিলো , এটি তার রিলিজ হয়া সকয়কালের চেয়েও ২০ বছর এগিয়ে ছিলো। আজকের এই যুগেও এসেও আমি থতমত খেয়ে যাই এই মুভির কনসেপ্ট নিয়ে।
ম্যাট্রিক্স মুভি সিরিজ দেখেনি এমন মুভিপ্রেমি এ পৃথিবীতে মনে হয় বেশ কম ই রয়েছেন। ১৯৯৯ সালে রিলিজ হওয়া এই হলিউড খ্যাত মুভি ম্যাট্রিক্স ছিলো দারুন কনসেপ্ট , গ্রাফিক্স এর কারসাজি এবং সাথে ছিল এক দূর্বোধ্য প্লট। মজার ব্যাপার হলো গিয়ে , ম্যাট্রিক্স দেখার পর কেউ এটা বলে না যে ‘মুভিটা বুঝিনি।’
আসলেই কি তাই? সব বুঝে গিয়েছেন? তবে ম্যাট্রিক্স মুভির দুই থেকে তিন টা প্রশ্ন করলেই আপনি হয়তোবা চিৎ — কাইত হয়ে যাবেন। বেসম্ভব কমপ্লিকেটেড এক প্লট এবং কনসেপ্ট ছিল বোধ্যের মধ্যেও দূর্বোধ্য।
আমি আজ ম্যাট্রিক্স এর কোন রিভিউ দিচ্ছিনা। সোজা চলে যাবো এক্সপ্লেনেশনে। আসলে মুভি দিয়ে কি বুঝানো হয়েছিলো আমাদের এবং কনসেপ্ট এতোটা জটিল কেনো , তা বুঝার চেষ্টা করবো।
প্রথমেই আমরা কিছু থিওরি বুঝার চেষ্টা করবো!
দ্যা স্যিমুলেশন হাইপোথিসিস
সিমুলেটর হল এমন এক কমান্ড প্রোসেসিং প্রোগ্রাম যেখানে ইউজার নিজ কমান্ড কে প্রোগ্রাম করে যেমন খুশি তেমনভাবে যেকোন ইন্টারফেস গড়ে তুলবে। সে ইন্টারফেস কোন একটা গেম ও হতে পারে। কোন একটি এপ্লিকেশন প্রোগ্রাম ও হতে পারে। কম্পিউটার সিমুলেশন ওয়ার্ল্ড ক্রিয়েশন হচ্ছে এমন এক প্রোসেস , যেখানে হুবহু রিয়্যাল ওয়ার্ল্ডের মতোই সব বানানো হয় , তবে তা শুধুই ইলিউশন। আসলে ওই জগতের সব কিছুই মিথ্যে। সবই বানানো কোন এক রচিয়তার। হতে পারে তা আপনার বা আমার চিন্তাশক্তির একটি কাল্পনিক জগৎ।
চলুন। এবার এক্সপ্লেনেশন এ যাই!
ম্যাট্রিক্স কি?
উত্তরঃ- মুভিতে দুইটি জগতের কথা বলা হয়েছে, যার একটি হলো রিয়্যাল ওয়ার্ল্ড। আরেকটি হলো Matrix । ম্যাট্রিক্স হল কম্পিউটার প্রোগ্রামে নিয়ন্ত্রিত এমন একটি প্রোগ্রাম , যেখানে শুধুমাত্র মানুষের মস্তিষ্ক সচল। বডি/শরীর নয়। সেই জগতের কোন কিছুই রিয়্যাল নয়। সবই প্রোগ্রাম দিয়ে বানানো। এক বিন্দু পরিমান কিছু সত্যি নয়। সবকিছুই শুধু কম্পিউটারের কোড এবং কোড।
কেনো ম্যাট্রিক্স বানানো হয়েছে?
উত্তরঃ- মুভির স্টোরি অনুযায়ী ২২০০ সালের দিকে মানুষ রোবোটের উপর এমনভাবে নির্ভর হয়ে গিয়েছিলো যে তারা এতো উন্নতমানের রোবোট বানিয়েছে , যাদের মধ্যে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স তৈরি হয়ে গিয়েছিলো। তাদের বুদ্ধিমত্তা ছিলো মানুষের ও উর্ধে। এর ফলে কোন এক রোবোট তার মত এরকম আরও রোবোট বানাতে বানাতে তাদের সংখ্যা এমন বেড়ে যায় আর তাদের ক্ষমতা অধিক থেকে অধিকতর হয়ে উঠে। যার ফলে রোবোট এবং মানুষের মদ্ধ্যে যুদ্ধ শুরু হয় এবং রোবোটের জয় হয়। আর এতে মানুষ তাদের গোলাম হয়ে যায়। রোবোটের পাওয়ার বা চার্জের জন্য তারা সূর্যের আলো ব্যবহার করতো। তাই মানুষ আকাশে কৃত্রিম মেঘ তৈরি করে দিয়েছিলো, যাতে পৃথিবীতে সূর্যের আলো পৌছোতে না পারে। আর সূর্যের আলো না পৌছোলে তো রোবোট রা বেঁচে থাকার জন্য শক্তি পাবেনা। মানে চার্জ পাবেনা। তাই তারা নিজেদেরকে চার্জ করার জন্য হিউম্যান প্রোডাকশন শুরু করে। মানুষের শরীর হতে ১২০ ভোল্টের ইলেক্ট্রিসিটি পাওয়া যায়। তারা মানুষের শরীরের সেই তাপ শক্তি হতে চার্জ নিয়ে বেঁচে থাকার এক অভিনব প্রক্রিয়া শুরু করে দেয়। পৃথিবীতে শাক সবজির চাষ এর বদলে চাষ হচ্ছে মানুষের। আর সেই মানুষদের গায়ের তাপ এবং ইলেক্ট্রিসিটি দিয়ে রোবোট রা বেঁচে থাকছে।
এবার কথা হলো , মানুষদের উৎপাদন করলে Matrix প্রোগ্রামের কি প্রয়োজন ছিলো? অবশ্যই প্রয়োজন আছে। কারণ , এখানে তো সবাই বর্তমানে ঘুমন্ত অবস্থায় আছে। কিন্তু কখনো না কখনো তো সবাই জেগে যাবেই তাই না? জেগে গেলে তারা এখানে থাকবেও না। হয় নিজেকে মেরে ফেলবে। নাহয় না খেয়ে ভয়েই মরে যাবে। ঠিক এই কারণে তাদের জন্য বানিয়ে দেয়া হয়েছে ম্যাট্রিক্স নামক এক কাল্পনিক জগত। এতে তাদের মস্তিষ্ক তো ভাবছে তারা বেঁচে আছে। তারা হাঁটাচলা করছে। ঘুমোচ্ছে। আনন্দ করছে। তাই তাদের মস্তিষ্ক ঠিকমতোই আছে আর মস্তিষ্ক যদি মনে করে তারা ঠিক আছে , তাহলে রিয়্যাল লাইফে তাদের জেগে উঠার ও সম্ভাবনা নেই। যেমনটা আমরা স্বপ্ন দেখার সময় ফিল করি যে স্বপ্নটাই আমাদের বাস্তব জগৎ। Very Powerful Concept. ভেবে দেখেছেন , কতো গভীরর চিন্তা ভাবনা এদের
মুভিতে NEO মানে অভিনেতা কেনো একজন স্যুপারহিরো?
উত্তরঃ- বলে নেয়া ভাল যে রোবোট রা এই পর্যন্ত ৬ বার ম্যাট্রিক্স প্রোগ্রাম বানিয়েছিলো। কিন্তু প্রতিবার ই কোন এক সময় মানুষরা তা বুঝে যায় আর তাদের প্রোগ্রাম ফেইল হয়ে যায়। মানে বাগস থাকে। যেমন ফেসবুক দুইদিন পর পর তাদের অ্যাপ আপডেট করে। এতে পূর্বের যতো সমস্যা থাকে, তা দূর করে। এটাও তাই। আর যারা ম্যাট্রিক্স এর কারসাজি বুঝে যায় , তাদের মধ্যেই রয়েছেন মরফিয়াস , ট্রিনিটি , নিউ এবং অন্যান্যরা। তারা চায় যাতে সেই ম্যাট্রিক্স হতে সবাইকে মুক্ত করা যায়। কিন্তু এর জন্য প্রয়োজন একজন শক্তিমান কাউকে। আর সে হলো NEO ।
NEO কেনো শক্তিশালী?
উত্তরঃ- আপনাদের মনে প্রশ্ন থাকবে যে NEO কেনো অনেক শক্তিশালী। সে ও তো মানুষ। তাহলে তার এতো ক্ষমতা কেনো। কিন্তু বলে নেয়া ভাল NEO একজন নয়। এর আগে ৫ টি ম্যাট্রিক্স প্রোগ্রাম রান করা হয়েছিলো। NEO সেগুলোতেও ছিল। গত ৫ বার একই ম্যাট্রিক্স রান হয়াতে NEO নিজেকে আস্তে আস্তে Develop করে ফেলেছে। তাই ৬ষ্ঠ বার নিউ’র অবিজ্ঞতা বেড়ে তার মধ্যে কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। সে ডেভেলপড
যেমন , আমাদের ফোনের কয়েকদিন পর পর সফটওয়্যার আপডেট বের হয়। ক’দিন বাদে বাদেই বাগস ফিক্সড করা হয়। সব বাগস ফিক্স করার পর একটি স্ট্যাবল আপডেট বের হয়। তেমনি , ম্যাট্রিক্স প্রোগ্রাম ও ৬ বার রান করা হয়েছে আর প্রতিবার ই বাগস এর কারণে কেউ না কেউ জেগে যায় ঘুম থেকে। আর ফেইক হয় ম্যাট্রিক্স প্রোগ্রাম।
ওরাকল কে?
উত্তরঃ- ওরাকল হলো সেই প্রোগ্রামের মাতা বা Mother যেকিনা ওই প্রোগ্রামের অনেক কোড = ভবিষ্যৎ ডিটেক্ট করতে পারে। সে আসলে ভবিষ্যৎ বলতে পারেনা , কিন্তু আন্দাজ নিতে পারে এবং ভবিষ্যত বানাতে সাহায্য করে। কি , বুঝলেন না?
হুম , সবাই ভাবছেন যে ওরাকল তো ফিউচার বলে দেয়। তবে তা মোটেও সত্য নয়। উনি ফিউচার বলতে পারেনা। বুঝাচ্ছি। নিও তার বাসায় প্রথম যাওয়ার পর সে নিও কে বলে “ভ্যাস (ফুলের টব) এর কথা চিন্তা কোরো না , আমার বাচ্চারা ওটা ঠিক করে দিবে”। এটা বলার পর নিউ পেছনে তাকায় আর ফুলের ভ্যাস টা ভেঙ্গে যায়। কি বুঝলেন?
উনি ভবিষ্যত বলেছেন নাকি বানিয়েছেন? যদি উনি নিও কে ভ্যাস এর কথা না বলতো , তাহলে নিও কি পেছনে তাকাতো? আর না তাকালে কি ভ্যাস ভাঙ্গতো? তাহলে সে ভবিষ্যত বললো , নাকি ভবিষ্যত বানালো?
চিন্তা করে দেখুন , প্যাঁচ টা কিভাবে লাগানো হলো। আপনি , আমি ভাববো যে সে ফিউচার বলে। কিন্তু না , সে ফিউচার বানাতে সাহায্য করে। এটা একটা প্যারাডক্স ও সৃষ্টি করে।
ওরাকল এর বাসায় চামচ বাঁকা করা হয়েছিল কিভাবে?
উত্তরঃ- সবাই তো রয়েছে ম্যাট্রিক্স এ তাই না? এখানে তো আপনার বা আমার ইচ্ছাতে কিছুই হবেনা , রাইট? কারণ সকল কিছুই কোড দিয়ে বানানো। তাহলে চামচ কিভাবে বাঁকানো গেলো এটাও একটি বড় প্রশ্ন নয় কি?
ম্যাট্রিক্স হলো কোড এর ওয়ার্ল্ড। কোড যেভাবে দেয়া , আমরা সেভাবেই দেখছি। কিন্তু কোড এ তো চামচ বাঁকা হয়ার কোড দেয়া নেই। তাহলে বাঁকা কেনো হবে?
ম্যাট্রিক্স এ কিছুই চেঞ্জ করা সম্ভব নয়। তবে হ্যাঁ , যেহেতু ম্যাট্রিক্স আপনার মাইন্ডের সাথেও কানেক্টেড , তাহলে আপনি যদি মনে করেন আপনার হাতে চামচ বাঁকা হয় নি , আপনিই বাঁকা হয়েছেন , তাহলে কেমন হয়? মানে আপনার হাতের চামচ বাঁকা হচ্ছেনা। আপনার মাইন্ড কে আপনার ইলিউশন কে চামচ বাঁকানো দেখার রেস্পন্স দিচ্ছেন। আর তাই চামচ টা বাঁকা হচ্ছে। তাহলে কি বুঝলাম? চামচ বাঁকা হচ্ছেনা , আপনি আপনাকেই বাঁকা করে চামচ কে দেখছেন। আপনার মাইন্ড কে আপনি বলছেন যে বাঁকা করে চামচ টা দেখতে। তাই দেখতে পাচ্ছেন চামচ বাঁকা। কিন্তু চামচ তো যেমন ছিল তেমন ই আছে। প্রচন্ড জটিল সব কনসেপ্ট। তাইতো ভাবি কেনো অযথা আমার মাথায় এই প্রেসার ফেললো। এই কনসেপ্ট টা বুঝতে আমার বেশ ভাবতে হয়েছিলো।
ওরাকল কি সব সময় সঠিক কথা বলেন?
উত্তরঃ- NEO লিফটে মরফিয়াস কে জিজ্ঞেস করেন , ওরাকল কি সব সময় সঠিক কি না? তখন মরফিয়াস বলেন , সঠিক কিছু বলে কি না সেটা পরের কথা। তোমার মাইন্ড কি বলে। মূলত এটা বুঝানো হয়েছে যে ওরাকল পথ দেখাবে। চলতে হবে নিজেকে। কারণ ম্যাট্রিক্সে আপনি = মাইন্ড শুধুমাত্র আপনার নিজের। আপনার মাইন্ড আপনার কন্ট্রোলে। ওরাকল কিছু বললেও লাভ নেই। যদিনা আপনি সেটা করেন। আর এখানে একটা প্যারাডক্স দেখতে পাই আমরা। যদি আপনার ব্রেইন আপনার কন্ট্রোলে থাকে , তাহলে ওরাকল কিছু বললেও কি না বললেও কি। যা করার তা তো আপনি নিজেই করলেন। এবার প্রশ্ন এই যে , ওরাকল বলেছে বলেই করেছেন , নাকি আপনার মাইন্ড এর কন্ট্রোলে করেছেন?
এজেন্ট স্মিথ কে?
উত্তরঃ- ম্যাট্রিক্স হলো একটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম। ধরুন সেই প্রোগ্রামটি একটি Windows অপারেটিং সিস্টেম। এবার কথা হলো , আপনার Windows এ কি সুরক্ষার জন্য Anti Virus রাখেন না? জ্বি , ম্যাট্রিক্স এ থাকা ব্যাক্তিরা NEO , মরফিয়াস এবং ট্রিনিটি র মত অনেকে ম্যাক্ট্রিক্স হতে বের হয়ে যেতে যায় এবং অন্যদের ও চায় ম্যাট্রিক্স হতে বের করে নিতে। এটি ম্যাট্রিক্স এর রুলস এর বাহিরে। ম্যাট্রিক্স বানানো হয়েছে সবার চিন্তাশক্তিজে বন্দী রাখতে। কেউ যদি এখান থেকে বের হয়ে যায় এবং অন্যদের ও বের করে দিতে চায় , তা রুলস এর বাইরে। তাই এন্টি ভাইরাস এর মতো ম্যাট্রিক্স প্রোগ্রামে এজেন্ট রাখা হয়েছে , তারাও একটা কম্পিউটার প্রোগ্রাম যারা ম্যাট্রিক্স এর সুরক্ষা করে। তারা প্রোগ্রাম হয়া সত্ত্বেও তাদের মাঝে রয়েছে বুদ্ধিমত্তা। তারা মানবদের চেয়েও অধিক ক্ষমতাশীল এবং অধিক চিন্তাশক্তিসমৃদ্ধ।
টেলিফোন দিয়ে কিভাবে ম্যাট্রিক্স হতে তারা বের হয়ে যায়?
উত্তরঃ- ধরুন আপনি এ জগতে আছেন। অপর জগতের সাথে যোগাযোগ এর একমাত্র রাস্তা হল নেটওয়ার্ক। কিন্তু নেটওয়ার্ক তো হয়া চাই এমন , যেটা রিয়্যাল ওয়ার্ল্ড হতে কানেক্ট হয়ে ম্যাট্রিক্স এও রয়েছে। আর তা হলো টেলিফোন। কারণ , টেলিফোনে কথা বলার সময় তো মানুষের কথাগুলো ডেটা হিসেবে সেভ হয়ে আরেকজনের কাছে যায়। যেহেতু ডেটা সেভ হচ্ছে টেলিফোন হতে , তাই ডেটা সেন্টারের সাথে টেলিফোনের সংযোগ আছে রাইট? আর ডেটা সেন্টার তো থাকবে মাস্ট রিয়্যাল ওয়ার্ল্ডে। তাই নয় কি? ব্যাস। যেহেতু টেলিফোনের সংযোগ রয়েছে রিয়্যাল ওয়ার্ল্ডে । তাই এটার মাধ্যমে রিয়্যাল ওয়ার্ল্ড হতে কমান্ড আসলে সেখানে ম্যাট্রিক্স এর ডেটা = যেকোন কিছু / ব্যাক্তি ও ট্রান্সফার হতে পারবে।
অথবা আপনি #টেলিপোর্টেশন সম্পর্কে পড়েছেন? কেমন হবে , যদি আপনাকে ইলেক্ট্রিক তার/ওয়্যার এর মাধ্যমে পরমাণুর মতো বিলিয়ন বিলিয়ন ছোট ছোট ভাগ করে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় পাঠানো যেতো? মূলত মূহুর্তের মধ্যে কোন বস্তু বা পরমাণুকে যদি এক স্থান হতে অন্য স্থানে কোন রকম ফিজিক্যাল ওয়ে ব্যাতিত ট্রান্সফার করা যায় , তাকেই টেলিপোর্টেশন বলে। মুভিতে ভূত প্রেত মূহুর্তের মধ্যে এক স্থান থেকে আরেক স্থান্র চলে যায়। স্যুপারহিরো মুভিতেও এসব দেখি আমরা। এটাই টেলিপোর্টেশন। সর্বপ্রথম ১৮৭৮ সালের দিকে এর চর্চা শুরু হয়।
ফিনিসিং এ স্মিথ কিভাবে তার এতগুলো কপি বানালো?
উত্তরঃ- স্মিথ ও কিন্তু নিও র মত ৫ বার এই ম্যাট্রিক্স প্রোগ্রামে থাকার ফলে ডেভেলপ হয়ে গিয়েছে। তার বুদ্ধিমত্তা ও ডেভেলপ হয়েছে। কোন প্রোগ্রাম কে আপনি ভাইরাস এর সাথে তুলনা করতে পারেন। কোনো ভাইরাস যদি খুব পাওয়ারফুল হয়ে যায় , তা আপনার সিস্টেমে বিভিন্ন ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। তার ক্ষমতা বেড়ে যায়। ভাইরাস বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে যায় । এভাবেই স্মিথ তার ক্ষমতা বাড়িয়েছে। এতে সে ম্যাট্রিক্সের কোডের সাথে নিজের কোড রিপ্লেস করা শুরু করলো।
স্মিথ কিভাবে নষ্ট হলো?
উত্তরঃ- স্মিথ একটি এডভান্সড প্রোগ্রাম। স্মিথ ম্যাট্রিক্স এর নিয়ম হতে বেড়িয়ে গিয়েছে। ম্যাট্রিক্সের দ্বিতীয় পার্টে প্রথম দিকে এজেন্ট স্মিথ নিও কে একটি খাম এ করে তার Earphone টা পাঠায়। এতে কি বুঝা যায়? Earphone টা ম্যাট্রিক্স প্রোগ্রামের সাথে যুক্ত। আর সে ওটা খুলে ফেলা মানে সে ওই প্রোগ্রাম এর ধরাবাধায় নেই। সে মুক্ত। তাই ম্যাক্ট্রিক্স তাকে কন্ট্রল করতেও পারছেনা। সে এতো পাওয়ারফুল হয়ে গিয়েছে যে তাকে সিস্টেম হতে Delete দেয়াও যাচ্ছিল না। তাহলে কিভাবে ডিলিট করা যাবে তাকে?
আমরা যারা প্রোগ্রামার বা কম্পিউটার সম্পর্কে ভাল জানি , তারা এটাও জানি যে আমরা কোন ফাইল কে সহজে ডিলিট করতে না পারলেও সারভারের ROOT হতে তা ডিলিট করতে পারি । NEO এটি বুঝতে পেরেছে। NEO রোবোটের সিটিতে গিয়ে Architect কে বললো স্মিথ ম্যাট্রিক্সের বিরুদ্ধে চলে গিয়েছে। নিউ স্মিথ কে ডেস্ট্রয় করতে পারবে। বদলে আর্কিটেক্ট যাতে ম্যাক্ট্রিক্স এর সবাইকে স্বাধীন করে দেয়। আর্কিটেক্ট রাজিও হয়। এরপর NEO ম্যাট্রিক্স এর মেইন কম্পিউটারের সাথে কানেক্ট হয়ে ম্যাট্রিক্স এর জগতে ঢুকলো স্মিথ কে ডেস্ট্রয় করতে। মনে রাখবেন , মেইন কম্পিউটার = Root । স্মিথ যেহেতু স্বচ্ছায় সিস্টেমের সাথে কানেক্ট হবেনা , তাই নিউ ট্রিক ইউজ করলো। স্মিথ নিও কে মুভির শেষে তার রূপ দিল। যেহেতু NEO Root এর সাথে কানেক্টেড তাই নিও এখন স্মিথ হয়াতে স্মিথ ও সিস্টেম রুট এর সাথে কানেক্টেড। রাইট? এবার কি? ব্যাস , স্মিথ কে সিস্টেম রুট হতে ডিলিট করে দেয়া হলো। এতে তার বানানো সকল কপি ও ডিলিট হয়ে গিয়েছে ম্যাট্রিক্স এর প্রোগ্রাম হতে। এতে স্মিথ বিনষ্ট হলো।
NEO কি মারা গিয়েছে শেষে?
উত্তরঃ- নাহ। মারা যায় কি। এটা বুঝার জন্য একটা হিন্ট দেয়া আছে। নিও র চোখ নষ্ট হবার পর নিও তার সাব-কনসিয়াস মাইন্ড দিয়ে দেখতো। আর সে যা দেখতো তা টেম্পারেচার এর মতো হলুদ ছিলো। যেমন নাইট ক্যামেরায় টেম্পারাচার এর মতো দেখায় হলুদ হলুদ। এটা মাথায় রাখুন আপাতত। এবার যখন স্মিথ কে ডিলিট করে দেয়া হল , তারপর নিউ কে কয়েকটা রোবোট যখন টেনে হিচরে নিয়ে যাচ্ছিল , তখন টেম্পারাচার এর মত হলুদ হলুদ একটি দৃশ্য দেখায় যেটায় স্পষ্ট প্রমাণ হয় যে নিও বর্তমানে অচেতন প্রায় বা অসুস্থ্য , কিন্তু বেঁচে আছে। ফিনিসিং টা Open Ended ছিল। তাই যে যার মতো ভাবতে পারেন। তবে আমি যেই যুক্তি টি দিয়েছি , আশা করি এটাই সঠিক। নিও বেঁচে ছিল।
এবার কথা হলো আর্কিটেক্ট কে?
উত্তরঃ- প্রথমে মনে হবে যে আর্কটেক্ট কোন God বা ম্যাট্রিক্স এর নির্মাতা। কিন্তু আসল কথা এই যে , সেই আর্কিটেক্ট নিজেই একটা প্রোগ্রাম।
শেষে ওরাকল আর্কিটেক্ট কে বলে “আপনি সত্যিই সবাইকে স্বাধীন করে দিবেন কি না?” প্রতিউত্তরে আর্কিটেক্ট বলে : “Why do you think human i am?” মানে সে মানুষ না, যে কথার বরখেলাফ করবে। সে নিজেও একটা প্রোগ্রাম। আর তাকে বানিয়েছে মেইন রোবোটগুলো। রোবোট এই আর্কিটেক্ট কে প্রোগ্রাম করেছে একজন God হিসেবে। রচিয়তা। আর সে রচিয়েছেন এই ৬ষ্ঠ ম্যাট্রিক্স
কনসেপ্ট এতোটা গভীর
প্যারাডক্স
মুভির শেষদিকে নিউ যখন স্মিথ এ রূপান্তর হয় , নিউ একটি মনোলগ দিয়েছিলো “it was Inevitable” যার অর্থ দাঁড়ায় — এটা অনিবার্য বা এটা হয়ার ই ছিলো।
প্রশ্ন আরেকটা উঠে যে , যদি নিও জানেই এসব হবে , তাহলে কেনোই এতো কিছু? কেনো এতো যুদ্ধ? আর নিও যদি এমনটা হয়ার কথা ভাবতেই পারে , তাহলে সে এতো কিছু কেনো করলো? যদি নিও জানতোই যে স্মিথ তাকে গ্রাস করবে আর সে স্মিথ এ রূপান্তর হবে, তাহলে এতো ফাইট করার কি দরকার ছিলো? প্রথমেই কেনো এটা করা হয়নি? কেজানে এটার মিনিং কি ছিলো। তবে আমার মতে নিও সবকিছু বুঝেও কোনো কিছু বদলাতে চায়নি। কারণ, সে নিজেই বলেছে “এটা অনিবার্য”। তাই বদলানোর তো প্রয়োজন ও নেই।
এক্সপ্লেনেশন সমাপ্ত
ম্যাট্রিক্স দেখে মনে হবে সব বুঝেছেন। কিন্তু উপরের ব্যাখ্যাগুলো কেউ জিজ্ঞেস করলে হয়তো আপনাকে চুপ করেই থাকতে হবে।
আসলে মুভির থিম এমনভাবে বানানো হয়েছে , যেকারোও কাছে ভালো লাগবে। কারণ, একশন VFX খুব দারুন। এদিকে সাই ফাই প্রেমিরা ভেবে মরবে। আমার প্রশ্ন একটাই। ১৯৯৯ সালে এমন কমপ্লিকেটেড প্লট কিভাবে বানানো হল? :’মাথা হ্যাং করার মতো সব কনসেপ্ট। এ থেকেই বুঝা যায় হলিউড ইন্ডাস্ট্রি কতো আগে থেকেই স্মার্ট এবং সময়ের চেয়েও অন্তত ৫০ বছর এগিয়ে। ১৯৯৯ সালে কেমনে কি? আর এত দারুন গ্রাফিক্স , ব্যুলেট টাইম শট , একশন , থ্রিডি গ্রাফিক্স
১৯৯৯ সালে কিভাবে বানালো এসব কে জানে , যেখানে Windows এর Usable ভারশন ই এসেছিল ২০০০ এর পর আর VFX রিলেটেড Software ই ভালমত এসেছিল ২০০২-৩ এর পর। কে জানে , কিভাবে করেছে তারা। কিন্তু এক কথায় বলতে গেলে ম্যাট্রিক্স এর মতো মুভি , হলিউডে এক পিস
এটার কোন কম্পিটিটর নেই।
বলাই যেতে পারে , এটি এমন একটি মুভি , যা বর্তমান সময়ের চেয়েও আরও ২০ বছর এগিয়ে। হয়তো আরও এগিয়ে! হলিউডের সর্বকালের সেরা
ফানি ফ্যাক্টস
আপনি জানেন কি? ম্যাট্রিক্স মুভিতে যেসব কম্পিউটার কোড দেখানো হয়েছে , সেগুলো সব জাপানিজ একটি কুক বুক মানে রান্নাবান্নার রেসিপি বইয়ের লাইন ছিলো
রেসিপি বুকটাকেই কোড হিসেবে মুভিতে দেখানো হয়েছে।
ধন্যবাদ আর্টিকেল টি পড়ার জন্য। ভুল ত্রুটি , মার্জনীয়। আশা করি সকলের নিকট বোধগম্য হবে।
The post The Matrix Trilogy — ফুল কনসেপ্ট এক্সপ্লেইন্ড | সায়েন্টিফিক থিওরি | ইন্ডিং এক্সপ্লেইন্ড উইথ প্যারাডক্স | ফ্যাক্টস appeared first on Aldinn Rocks.
Top comments (0)